অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : কিয়েভ রাশিয়াকে পূর্বাঞ্চলীয় খেরসনে একটি জলবিদ্যুৎ বাঁধ ধ্বংস করার পরিকল্পনার জন্য অভিযুক্ত করেছে। যেখানে ইউক্রেনীয় সৈন্যরা ক্রমাগত অগ্রসর হচ্ছে এবং সেখান থেকে মস্কো তাদের সমর্থিত কর্তৃপক্ষ সরিয়ে নেওয়া শুরু করেছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রুশ বাহিনী কাখোভকা জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি উড়িয়ে দেওয়ার অভিপ্রায়ে খনন করেছিল, যা ‘বড় ধরনের বিপর্যয়’ হিসাবে গণ্য হবে।
বাঁধটি ধ্বংস হয়ে গেলে নিম্ন ডিনিপ্রো নদীর আশেপাশের কয়েক লাখ মানুষ দ্রুত বন্যার ঝুঁকিতে পড়বে। জেলেনস্কি ইউরোপীয় নেতাদের কাছে বৃহস্পতিবার এক বক্তৃতায় সতর্ক করেছিলেন।
তিনি বলেন, দক্ষিণে পানির সরবরাহ কমানোর ফলে ইউরোপের বৃহত্তম জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের শীতলীকরণ ব্যবস্থার ওপরও প্রভাব পড়তে পারে এবং রাশিয়া কর্তৃক ২০১৪ সাল থেকে দখল করা উত্তর ক্রিমিয়ান খাল, যা ক্রিমিয়াকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পানি সরবরাহ করে ধ্বংস করতে পারে।
জেলেনস্কির উপদেষ্টা মাইখাইলো পোডোলিয়াকের মতে, রাশিয়ার লক্ষ্য এই অঞ্চলে ইউক্রেনের অগ্রগতি বন্ধ এবং রুশ সেনাদের রক্ষা করা।
ইউক্রেন জুড়ে শহরগুলো বৃহস্পতিবার শীতের আগে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে শুরু করেছে। কারণ, কর্তৃপক্ষ সতর্ক করেছে যে রাশিয়ার আক্রমণে দেশের জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিডের ব্যাপক ক্ষতি দেশ থেকে শরনার্থীদের একটি নতুন ঢেউ সৃষ্টি করবে।
ইইউ কাউন্সিলে এক ভাষণে জেলেনস্কি বলেন, ‘রাশিয়ার নেতৃত্ব জ্বালানি ও বিদ্যুৎ ব্যবস্থাকে যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করার নির্দেশ দিয়েছে। এর পরিণতি আবার ইউরোপে আমাদের সবার জন্য খুবই বিপজ্জনক।’
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এক সপ্তাহের মধ্যে রাশিয়ান ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় দেশটির অন্তত ৩০ শতাংশ পাওয়ার স্টেশন ধ্বংস হওয়ার পর দেশজুড়ে জ্বালানি-সাশ্রয়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
কিয়েভের কিছু অংশে রাতারাতি ব্ল্যাকআউটের পরে, শহরের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো ব্যবসায়ীদের ‘যতটা সম্ভব’ স্ক্রিন এবং সাইনবোর্ডের আলো সীমিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘এমনকি ক্ষুদ্র সঞ্চয় এবং প্রতিটি বাড়িতে বিদ্যুৎ খরচ হ্রাস জাতীয় জ্বালানি ব্যবস্থার অপারেশনকে স্থিতিশীল করতে সহায়তা করবে।’ ইউক্রেনীয়রা এর বিক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানায়।
ডিনিপ্রোর বাসিন্দা ওলগা বলেন, ‘এটি আমাদের মনোভাব পরিবর্তন করতে পারছে না, হয়তো আমরা তাদের (রাশিয়া) আরও ঘৃণা করব।’
তিনি বলেন, ‘আমি রাশিয়ায় থাকার চেয়ে পানি এবং বিদ্যুৎ ছাড়াই ঠান্ডায় বসে থাকতে চাই।’
ইলেকট্রনিক্স বিক্রেতা কিরিলোর মতে, লোকেরা জেনারেটর এবং ব্যাটারির মতো সহায়ক বিদ্যুৎ সরবরাহ কিনতে ছুটে আসছিল।
আসন্ন শীতের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি মনে করি এমন কিছুই হবে না যা আমরা বাঁচতে পারব না।’
তিনি বলেন, ‘যে কোনো অবস্থাতেই এক ধরনের গরম থাকবে, এবং এটি ২০ এর পরিবর্তে ১৬ ডিগ্রি (সেলসিয়াস বা ৬১ ফারেনহাইট) হবে তাতে খুব বেশি কিছু আসে যায় না। শুধু একটি গরম কাপড় এবং মোজা পরুন।’
Leave a Reply